হাফিজুর রহমান হাফিজ, উল্লাপাড়া:
আসন্ন কোরবানী ঈদকে সামনে রেখে সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়ায় খামার ও গৃহস্থ পরিবারগুলোতে পুরোদমে ষাড় গরু লালন-পালন চলছে। প্রতিটি খামারে এখন গরুর খাদ্য সরবরাহ বৃদ্ধি করা হয়েছে, বাড়ানো হয়েছে যত্ন ও পরিচর্যার মাত্রা। খামারগুলোতে গরুগুলোর আরাম নিশ্চিতে চালু করা হয়েছে ফ্যানের ব্যবস্থা, রাখা হচ্ছে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন পরিবেশে।
এদিকে, বিভিন্ন এলাকার গরু ব্যাপারীরা ইতিমধ্যে গ্রামে গ্রামে ঘুরে পালিত গরু দেখে যাচ্ছেন, কেউ কেউ দামও করছেন। উপজেলা প্রাণীসম্পদ দপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, উল্লাপাড়ায় বর্তমানে ৩ হাজার ২৪ জন খামারী রয়েছেন এবং তাঁদের মাধ্যমে মোট ২৯ হাজার ৬৩টি গরু লালন-পালন করা হচ্ছে। এর মধ্যে কোরবানীর জন্য প্রস্তুত রাখা হচ্ছে ২৩ হাজার ৭০১টি ষাড় গরু, ৪ হাজার ১৭২টি বলদ এবং ১ হাজার ১৯০টি গাভী।
এছাড়া উপজেলায় ৪১ হাজার ৯৭৩টি ছাগল ও ৪ হাজার ৬৫৯টি ভেড়া লালন-পালন করা হচ্ছে। প্রাণীসম্পদ বিভাগের হিসাব অনুযায়ী, পশুর মোট সরবরাহ ৭৭ হাজার ৪৯৫টি, যেখানে চাহিদা প্রায় ৪২ হাজার ৫৭০টি। অর্থাৎ, অতিরিক্ত সরবরাহ রয়েছে প্রায় ৩৫ হাজার পশু।
স্থানীয় খামারিরা জানিয়েছেন, গত তিন মাস ধরে তাঁরা গরুগুলোর খাদ্য সরবরাহ বাড়িয়ে দিয়েছেন। মোটা-তাজা করতে গম ভুসি, ছোলা, খেসারী, ও মসুর ডালের ভুসির মতো দানাদার খাদ্য খাওয়ানো হচ্ছে। তবে, উপজেলা প্রাণীসম্পদ কর্মকর্তা ডা. শেখ এম এ মতিন সতর্ক করেছেন, গরু মোটা তাজা করতে কোনো ধরনের স্টেরয়েড, কেমিক্যাল বা মুরগির ফিড ব্যবহার না করার জন্য।
তিনি জানান, এ ধরনের ক্ষতিকর খাদ্য ব্যবহারে ইতিমধ্যে অনেক গরু মারা গেছে। তাই সচেতনতা বাড়াতে বিভিন্ন এলাকায় প্রচার চালানো হচ্ছে। তিনি আরও জানান, ঈদের দশ দিন আগে থেকে উপজেলার প্রতিটি হাটে গরুর চিকিৎসা সেবা নিশ্চিত করতে মেডিকেল টিম মোতায়েন থাকবে।
উল্লাপাড়ার নাগরৌহা গ্রামের দক্ষিণপাড়ায় পাঁচটি পরিবারে প্রায় ৩০টি বড় দেশীয় জাতের ষাড় গরু লালন করা হচ্ছে। এসব গরু ৩ থেকে সাড়ে ৩ লাখ টাকায় কেনা হয়েছে অনেক আগেই। এখন চলছে তাদের মোটা তাজা করার চূড়ান্ত প্রস্তুতি।
খামারিরা বলছেন, এবার খাদ্য, শ্রম ও চিকিৎসা খরচ বেড়ে যাওয়ায় গরু পালনে ব্যয় তুলনামূলকভাবে অনেক বেশি হচ্ছে। তবে ঈদে ভালো দাম পেলে সেই খরচ ওঠে আসবে বলে আশা করছেন তারা।