জয়পুরহাট, প্রতিনিধিঃ- জয়পুরহাটের পাঁচবিবি উপজেলার চাঁনপাড়া এলাকার সাথী হিমাগার লিমিটেডে অনিয়ম ও দুর্নীতি চলছে বলে অভিযোগ উঠেছে। হিমাগারে আলু সংরক্ষণের জন্য আসা ট্রাক ও যানবাহন সড়কের পাশে দীর্ঘ সময় দাঁড়িয়ে থাকে, যা তীব্র যানজটের সৃষ্টি করছে। এতে সাধারণ জনগণ, চালক ও যাত্রীরা চরম দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন।
হিমাগারের পার্কিং সমস্যা, ভোগান্তির শিকার কৃষক ও চালকরা, স্থানীয়দের অভিযোগ, হিমাগারে কোনো পার্কিং ব্যবস্থা না থাকায় ট্রাক ও পরিবহনগুলো রাস্তায় দাঁড়িয়ে থাকতে বাধ্য হয়। ফলে দীর্ঘ যানজট তৈরি হয়, যা পথচারী ও স্থানীয় ব্যবসায়ীদের জন্য দুর্ভোগ বয়ে আনে। অনেক চালক জানান, তারা দিনের পর দিন অপেক্ষা করেও আলু আনলোড করতে পারছেন না। যারা ঘুষ দিচ্ছেন, তাদের ট্রাক আগে প্রবেশ করছে, অন্যদের অপেক্ষায় রাখা হচ্ছে।
একজন চালক নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন,
“আমরা পাঁচ-ছয় দিন ধরে এখানে দাঁড়িয়ে আছি, কিন্তু আমাদের গাড়ির কোনো খবর নেই। অথচ যাদের কাছ থেকে টাকা নিচ্ছে, তাদের গাড়ি আগে ঢুকিয়ে দিচ্ছে।”
শ্রমিকদের সংখ্যা ও মজুরির গরমিল ,হিমাগার কর্তৃপক্ষ দাবি করেছে, সেখানে ১৩০ থেকে ১৫০ জন শ্রমিক কাজ করছে। কিন্তু প্রকৃত শ্রমিকরা জানান, মাত্র ১৫-১৬ জন শ্রমিক দিয়ে পুরো কাজ চালানো হচ্ছে। একজন শ্রমিক বলেন,
“আমরা ১৫-১৬ জন শ্রমিক এখানে কাজ করছি, অথচ তারা বলছে ১৩০-১৫০ জন! এগুলো সব মিথ্যা কথা।”
শ্রমিকরা আরও জানান, প্রতিটি আলুর বস্তার জন্য ৮-১০ টাকা নেওয়া হলেও শ্রমিকদের দেওয়া হচ্ছে মাত্র ৩ টাকা। একজন শ্রমিক অভিযোগ করে বলেন,”আমরা বস্তা প্রতি ৩ টাকা পাচ্ছি, অথচ তারা সাধারণ কৃষকদের কাছ থেকে ৮-১০ টাকা নিচ্ছে। এই টাকার বড় অংশ তাদের পকেটে যাচ্ছে। আমরা গরিব মানুষ, কিছু বলার সাহস পাই না।”
স্থানীয় কৃষক, শ্রমিক ও চালকরা প্রশাসনের কাছে অনুরোধ করেছেন, এই দুর্নীতি ও অব্যবস্থাপনা বন্ধ করতে দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হোক। বিশেষ করে, ট্রাক পার্কিংয়ের জন্য নির্দিষ্ট স্থান নির্ধারণ,ঘুষ ও অগ্রাধিকার ভিত্তিতে ট্রাক প্রবেশের অনিয়ম বন্ধ, শ্রমিকদের ন্যায্য মজুরি নিশ্চিতকরণ,, কৃষকদের কাছ থেকে অতিরিক্ত টাকা আদায় বন্ধ করা।
“স্থানীয় বাসিন্দারা বলেন, আমরা চাই, প্রশাসন এগিয়ে আসুক এবং এসব অনিয়ম বন্ধ করুক। আমরা আর এই দুর্ভোগ চাই না।”এই বিষয়ে সাথী হিমাগার কর্তৃপক্ষের বক্তব্য নিতে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও, তারা কোনো মন্তব্য দিতে রাজি হয়নি। চাঁনপাড়া সাথী হিমাগারের এই অব্যবস্থাপনা ও দুর্নীতি কৃষক, শ্রমিক ও সাধারণ মানুষের জন্য চরম দুর্ভোগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে যদি দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া না হয়, তাহলে সাধারণ জনগণের ভোগান্তি আরও বাড়বে। স্থানীয়রা সরকার ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করছেন।