ডিমলা (নীলফামারী) প্রতিনিধিঃ নীলফামারীর ডিমলা থানা ভবনটি ১৯৮৩ সালে নির্মিত হওয়ার পর থেকে পর্যাপ্ত সংস্কারের অভাবে জরাজীর্ণ ও বিপজ্জনক হয়ে পড়েছে। দ্বিতল এই ভবনের ছাদ ও দেয়ালের প্লাস্টার খসে পড়ছে, মরচে ধরা লোহার রড বেরিয়ে আসছে, এবং বড় বড় ফাটল দেখা দিয়েছে। এই ঝুঁকিপূর্ণ পরিবেশে ৬০ জন পুলিশ সদস্য, যার মধ্যে ১ জন পরিদর্শক, ১ জন পরিদর্শক (তদন্ত), ১১ জন এসআই, এবং ৮ জন এএসআই রয়েছেন, তারা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে দাপ্তরিক কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন।
সরেজমিনে পরিদর্শনে দেখা গেছে, থানার ব্যারাক ও কক্ষগুলোর ছাদে ফাটল, খসে পড়া প্লাস্টার, এবং ঝুলে থাকা লোহার রড ভয়াবহ অবস্থার সৃষ্টি করেছে। বর্ষাকালে ছাদ চুইয়ে পানি ঘরে প্রবেশ করে, রান্নাঘরে পানি জমে কীটপতঙ্গের উপদ্রব বাড়ে। চেয়ার-টেবিল ব্যবহারের অনুপযোগী, যা পুলিশ সদস্যদের কাজ ও জীবনযাত্রাকে ব্যাহত করছে।
পুলিশ সদস্য রাজু মিয়া বলেন, “ছাদ থেকে ইট-সুরকি খসে পড়ার ভয়ে সবসময় তটস্থ থাকতে হয়। বর্ষায় পানি চুইয়ে ঘরে জমে, জীবন অসহনীয় হয়ে ওঠে।” আরেক সদস্য শংকর জানান, “রাতে ঘুমানোর সময় প্লাস্টার ও আবর্জনা গায়ে পড়ে, চোখ-মুখে লাগে। নতুন ভবন ছাড়া শান্তিতে কাজ করা অসম্ভব।”
ডিমলা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) ফজলে এলাহী বলেন, “এই জরাজীর্ণ ভবনে কাজ করতে গিয়ে দুর্ঘটনার আশঙ্কা মনোবল ভেঙে দেয়। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে একাধিকবার অবহিত করা হয়েছে, কিন্তু এখনও কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি।” তিনি ভবনটি পরিত্যক্ত ঘোষণা করে নতুন ভবন নির্মাণের জন্য জরুরি পদক্ষেপের দাবি জানান।
নীলফামারী জেলা পুলিশ সুপার এ.এফ.এম তারিক হোসেন খান বলেন, “পুলিশ সদস্যদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা আমাদের অগ্রাধিকার। বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে দেখা হচ্ছে, এবং নতুন ভবন নির্মাণের প্রস্তাব সরকারের কাছে পাঠানো হবে।”
স্থানীয় সচেতন মহল মনে করেন, ডিমলা থানা ভবনের বিপজ্জনক অবস্থা অবিলম্বে আমলে নিয়ে নতুন ভবন নির্মাণ বা সংস্কার জরুরি। অন্যথায়, কোনো অনাকাঙ্ক্ষিত দুর্ঘটনার জন্য কর্তৃপক্ষ দায়ী থাকবে। তারা সরকারের সংশ্লিষ্ট মহলের দ্রুত হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।