নিয়ন্ত্রণ রেখা যেন বারুদের স্তূপ! বৃহস্পতিবার গভীর রাতে জম্মু অঞ্চলের আকাশ রক্তিম আভা ধারণ করে, যখন একের পর এক ক্ষেপণাস্ত্র আঘাত হানে। বিকট শব্দে কেঁপে ওঠে সীমান্ত এলাকা, আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে সাধারণ মানুষের মধ্যে। এনডিটিভি এবং বিবিসির প্রাথমিক সূত্রে এই ভয়াবহ চিত্র উঠে এসেছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পাকিস্তানের ছোড়া আটটি ভয়ংকর ক্ষেপণাস্ত্র আরএস পুরা, আরনিয়া, সাম্বা এবং হীরানগরের মতো স্পর্শকাতর এলাকাগুলোতে আঘাত হানে। যদিও ভারতীয় প্রতিরক্ষা বাহিনী দ্রুত পাল্টা ব্যবস্থা নিয়েছে বলে দাবি করা হচ্ছে, তবে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ এখনো স্পষ্ট নয়।
হামলার পরপরই অন্ধকারে ডুবে যায় গোটা জম্মু সীমান্ত। মোবাইল পরিষেবা স্তব্ধ করে দেওয়া হয়েছে, তৈরি হয়েছে এক শ্বাসরুদ্ধকর পরিস্থিতি। শুধু জম্মুই নয়, পাঞ্জাবের ফিরোজপুর ও গুরুদাসপুর এবং পাকিস্তানের সীমান্তবর্তী রাজস্থানও ব্ল্যাকআউটের আওতায় আনা হয়েছে। চারদিকে আতঙ্ক আর অনিশ্চয়তা।
এদিকে, সিএনএন সূত্রে পাঞ্জাবের পাঠানকোট শহরেও একটি বড়সড় বিস্ফোরণের খবর পাওয়া গেছে, যা পরিস্থিতি আরও ঘোলাটে করে তুলেছে।
গত ২২শে এপ্রিল পেহেলগামের নৃশংস হামলার রেশ কাটতে না কাটতেই এই নতুন করে উত্তেজনা। ভারত ইতিমধ্যেই পাকিস্তানকে ওই হামলার জন্য দায়ী করেছে, যদিও ইসলামাবাদ বরাবরই তাদের সম্পৃক্ততার কথা অস্বীকার করে আসছে। এর আগে, গত ৬ই মে ভারতও আজাদ কাশ্মীরে অন্তত নয়টি স্থানে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায় বলে খবর আসে।
বিশ্লেষকদের মতে, ভারত তাদের আগের হামলার স্বপক্ষে জোরালো প্রমাণ দিতে না পারলেও, পাকিস্তানের এই পাল্টা আঘাত পরিস্থিতিকে এক বিপজ্জনক মোড়ে নিয়ে যেতে পারে। পারমাণবিক শক্তিধর এই দুই প্রতিবেশী দেশের মধ্যে ক্রমবর্ধমান উত্তেজনা যে কোনো মুহূর্তে ভয়াবহ রূপ নিতে পারে, এমনটাই আশঙ্কা করছেন আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশেষজ্ঞরা। এখন দেখার বিষয়, এই পরিস্থিতি কোন দিকে মোড় নেয়।
এই পরিস্থিতিতে স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে চরম আতঙ্ক বিরাজ করছে। ঘরবাড়ি ছেড়ে নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁজে ছুটছেন অনেকে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে শান্তি বজায় রাখার আহ্বান জানানো হয়েছে, তবে সীমান্তের পরিস্থিতি ক্রমেই নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাচ্ছে বলে মনে করছেন অনেকে।