1. dailybogratimes@gmail.com : admin :
পিলখানা হত‍্যাকান্ড  ১৬ বছর পর জামিনে মুক্ত হয়ে ভারসাম্যহীন অবস্থায় বাড়ি ফিরলেন ফজলু - Daily Bogra Times
বুধবার, ১৯ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ০৭:৫২ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম
বগুড়ার শেরপুরে ক্ষুদ্র-নৃ গোষ্ঠীদের মাঝে ৪৬ টি গরু বিতরণ ১০ লাখ ৩৬ হাজার হেক্টর জমিতে পানি দিচ্ছে বিএমডিএ জয়পুরহাটে নাগরিক সমাজ সংগঠনের ত্রৈ-মাসিক গণতান্ত্রিক সংলাপ বসতবাড়ির দরজায় তালা ঝুলিয়ে উধাও মহাদেবপুরে কাঁটাতারের বেড়া দিয়ে রাস্তা বন্ধের অভিযোগ ছাত্র ইউনিয়ন সরকারি আজিজুল হক কলেজ আহ্বায়ক কমিটি গঠিত সরকারে থাকার খায়েশ থাকলে পদ ছেড়ে নির্বাচনে আসুন : যশোরে মির্জা ফখরুল বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর মজলুম জননেতা এটিএম আজহারুল ইসলামের মুক্তির দাবীতে বিক্ষোভ সমাবেশ  ৭১-এ স্বাধীনতার বিরোধীতা এখনও ষড়যন্ত্র করছেন : পাবনায় ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু মশাল প্রজ্জ্বলন করে তিস্তা বাঁচানোর দাবি জয়পুরহাটে হোটেল ও রেস্তোরা শ্রমিকদের বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ

পিলখানা হত‍্যাকান্ড  ১৬ বছর পর জামিনে মুক্ত হয়ে ভারসাম্যহীন অবস্থায় বাড়ি ফিরলেন ফজলু

মাহবুব হোসেন,ভূরুঙ্গামারী (কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধি:
  • আপডেট সময়ঃ মঙ্গলবার, ২৮ জানুয়ারী, ২০২৫
  • ১৯ Time View
পিলখানা হত‍্যাকান্ড  ১৬ বছর পর জামিনে মুক্ত হয়ে ভারসাম্যহীন অবস্থায় বাড়ি ফিরলেন ফজলু
print news

ভূরুঙ্গামারী(কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধি : কুড়িগ্রামের ভূরুঙ্গামারী উপজেলার আন্ধারীঝাড় ইউনিয়নের ধাউরারকুঠি গ্রামের মধ্যবিত্ত পরিবারের সন্তান ফজলুর রহমান।

তার পিতার নাম মৃত শাহার আলী। দেশ সেবার ব্রত নিয়ে যোগ দেন বাংলাদেশ রাইফেলস এ। যৌবনের দিনগুলো কেটেছে দেশের সীমান্ত রক্ষায় চৌকশ সিপাহি হিসেবে। সিপাহি থেকে লেন্সনায়েক পদে পদন্নতি পেয়েছিলেন তিনি। তার কর্মস্থল বিডিআর হেডকোয়র্টার পিলখানায় থাকায় ফেঁসে যায় ২০০৯ সালের ২৫ ও ২৬ ফেব্রুয়ারী ঘটে যাওয়া বিডিয়ার হত্যাকান্ডের ঘটনার বিষ্ফোরকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনের মামলায়। প্রহসনের বিচারে ১৬ বছর কারাভোগ করে সদ্য জামিন পান তিনি। গত ২৩ জানুয়ারী কাশিমপুর কারাগার থেকে মুক্ত হয়ে ২৪ জানুয়ারী ভারসাম্যহীন অবস্থায় তার নিজ বাড়িতে ফিরেছেন ফজলুর রহমান। এসময় এক হৃদয় বিদারক ঘটনা সৃষ্টি হয়। দলে দলে তাকে দেখতে আসে আত্মীয় স্বজন, বন্ধু-বান্ধব ও গ্রামবাসী। এখন মুক্ত হলেও ফজলুর রহমান কিছুটা মানষিক ভারসাম্যহীন হয়ে পড়েছেন।।স্বাভাবিক কথা বলতেও সমস‍্যা হচ্ছে তার। ৭ ভাই বোনের মধ‍্যে ফজলুর ৩য়। দীর্ঘ অপেক্ষার পর মুক্ত বাতাসে স্বামীকে ফিরে পেয়েও স্বামীর শাররীক অবস্থা আর চাকুরী না থাকায় সামনের দিনগুলো কিভাবে চলবে এ নিয়ে শঙ্কায় তার স্ত্রী। 

কারাভোগের ১৬ বছরে তিনি হারিয়েছেন প্রিয় মা-বাবা, বোনসহ ৯জন নিকট আত্মীয়। বিনা দোষে জেল, প্রিয়জনদের হারিয়ে মানষিক ভারসাম্যহীন হয়ে পড়েছেন তিনি। অনেকে তার সাথে দেখা করতে আসলে নির্বাক তাকিয়ে থাকছেন তিনি। দীর্ঘ ১৬ বছর অপেক্ষার পর স্বামীকে কাছে পেয়েও দু:শ্চিন্তা কাটছে না স্ত্রী রাশেদা খাতুনের। ১৬ বছর অসহনিয় দু:খ, কষ্ট আর গ্লানি নিয়ে চলতে হয়েছে পরিবারের সদস্যদের। এমনকি কারাগারে দেখতে পর্যন্ত যেতে পারেননি তারা।

আবেগে আপ্লুত হয়ে কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন রাশেদা। তিনি জানান, ১৬টি বছর সমাজের নানা সমালোচনা সহ্য করে খেয়ে না খেয়ে স্বামীর জন্য অপেক্ষা করেছি। নিজের সন্তান না থাকায় ননদের সন্তানকে নিয়ে মানুষ  করেছে। ছোট থেকেই সেই মেয়ে তার বাবাকে (ফজলুর রহমান) খুজেছে, আমি কোন উত্তর দিতে পারি নাই। এখন স্বামী ফিরে আসলেও ভারসাম্যহীন হয়ে পড়েছে। অনেককে চিনতে পারছে আবার অনেককে চিনতে পারছে না। আবোল তাবল বলছে। আমি এখন কি করবো, কোথায় যাবো। 

ফজলুর রহমানের বড় ভাই ছামাদ আলী বলেন, সংসারে অভাব অনটন থাকায় ফজলুর রহমানের লেখা পড়া বন্ধ করে বিডআরে পাঠাই। সে খুব ভালো ছিলো, ছোট দুই ভাইকে তার অনুপ্রেরণায় সেনাবাহীনিতে দেই। ফজলুর রহমান দেশের জন্য কাজ করেছে। হঠাৎ কি থেকে কি হয়ে গেল বুঝতে পারিনাই। ১৬ বছর ভাই কারাগারে ছিলো আমরা তাকে দেখতে পর‌্যন্ত যেতে পারি নাই। মানুষ আমাদের ঘৃর্ণার চোখে দেখেছে। এই কয়েক বছরে আমাদের বাবা- মা, এক বোনসহ ৯জন নিকট আত্মীয় মারা গেছে  ও দেখতে পারে নাই।

ছোট ভাই অবসরপ্রাপ্ত সেনা সদস্য ইউসুফ আলী জানান, বড় ভাই ফজলুর রহমানের অনুপ্রেণার আমরা দুই ভাই সেনাবাহীনিতে যোগ দেই। সেই পরিবারের সদস্য হয়েও আমার ভাইকে বিনা দোষে ১৬ বছর কারাভোগ করতে হলো। ১৯ তারিখের যে জাজমেন্ট ছিলো সেটাতে আমরা খুশি। আমাদের ভাইকে ফিরে পেয়েছি। তবে ভাইয়ের চাকরি নাই। এখন অসুস্থ্য। কিভাবে তার সংসার চলবে তা নিয়ে দুঃশ্চিন্তা আছে। সরকারের কাছে   তার চাকুরী ফিরিয়ে দেয়ার দাবী জানাই।

স্হানীয় আনিছুর রহমান ও তাসলিমা খাতুন জানান, ১৬ বছর এই পরিবারের উপর দিয়ে অনেক দুঃখ কষ্ট গেছে। এখন ফজলুর ভাই ফিরে আসলেও  রোগে শোকে আক্রান্ত। তার চিকিৎসা দরকার।সরকারকে তার চিকিৎসা এবং পূনর্বাসন করতে হবে।

ফজলুর রহমান বলেন,এ মামলার সাথে কোন সংশি­ষ্ঠতা ছিলো না বলে মুক্ত হয়েছেন তিনি। ১৬ বছরে বাবা- মা, বোন মারা গেছেন,২ ফুফু মারা গেছেন, জ্যাঠা-মামাসহ আরোও কয়েকজন নিকট আত্মীয় মারা গেছেন তাদেরও দেখতে পারি নাই। তাদের তো আর ফিরে পাব না। তাদের না দেখার কষ্ট নিয়েই থাকতে হবে। তিনি আরো বলেন, আমার চাকুরীটাই ছিলো একমাত্র সম্বল । এখন তো চাকুরীটাও নেই। সরকারের কাছে দাবী আমাদের  পূনর্বাসন করুক। সরকার চাইলে এটা করতে পারে।পূনর্বাসন হলে আমার আর চাওয়ার কিছু নাই।

শেয়ার করুন

আরো খবর দেখুন
© All rights reserved © Daily Bogra Times/2025
Theme Customized BY LatestNews