যেখানে আম, সেখানেই জমজমাট বাণিজ্য! যশোরের শার্শা উপজেলার বেলতলা বাজার এখন যেন আমের রাজধানী। প্রতিদিন ১৫ থেকে ২০ হাজার মণ আম কেনাবেচা হয় এই বাজারে, আর টাকার অংকে যার পরিমাণ ৫ থেকে ৬ কোটি টাকা! সকাল থেকে রাত পর্যন্ত আমের হাঁকডাক আর দামদরের মাতমে গমগম করছে পুরো বাজার।
সাতক্ষীরা-নাভারণ সড়কের দুই ধারে ক্যারেটভর্তি গোপালভোগ, হিমসাগর, ল্যাংড়া, ক্ষীরশাপাতি, আম্রপালি—নানান জাতের আম। দূর-দূরান্ত থেকে ছুটে আসছেন পাইকাররা, আর কৃষকরা ঘাম ঝরানো পরিশ্রমের ফল তুলে দিচ্ছেন নগদ দামে।
বেলতলা বাজারে রয়েছে ৮৬টি আমের আড়ৎ। এখানকার আম শুধু দেশেই নয়, পাড়ি জমায় বিদেশেও। বাজার কমিটির প্রচার সম্পাদক মন্টু মিয়া গর্বের সাথে বলেন, “এখানে ফরমালিনমুক্ত, টাটকা আম বিক্রি হয়। কৃষকরা কোনো চাপ ছাড়াই ব্যবসা করতে পারেন।”
জার কমিটির সভাপতি মাহমুদ হোসেন জানান, বাজারে তিন ধরনের আড়ৎ রয়েছে—‘এ’, ‘বি’ ও ‘সি’ গ্রেড। ‘এ’ গ্রেডের আড়তদাররা প্রতিদিন গড়ে ১০ থেকে ১৫ লাখ টাকা, ‘বি’ গ্রেড ৬ থেকে ১০ লাখ টাকা এবং ‘সি’ গ্রেড ৩ থেকে ৪ লাখ টাকার আম বিক্রি করেন।
সাতক্ষীরা-নাভারণ সড়কের দুই পাশে অবস্থিত এই বাজারে প্রতিদিন শত শত ভ্যান, করিমন-নসিমন ও ইঞ্জিনচালিত যানবাহন আম নামানোর জন্য দাঁড়ায়, যা যানজট ও ছোটখাটো দুর্ঘটনার কারণ হয়ে দাঁড়ায়। ব্যবসায়ীরা জানান, বাজারটি যদি কোনো মাঠে স্থানান্তর করা যায়, তাহলে নিরাপদে আম বিক্রি ও পরিবহন সম্ভব হবে।
বাজার কমিটির সাধারণ সম্পাদক কামরুজ্জামান জানান, ৬ মে থেকে আম কেনাবেচা শুরু হয়েছে। বর্তমানে গোপালভোগ, ক্ষীরশাপাতি, গোবিন্দভোগ ও গোপালখাস বিক্রি হচ্ছে। ২১ মে থেকে হিমসাগর, ২৮ মে থেকে ল্যাংড়া এবং ৬ জুন থেকে আম্রপালি ও মল্লিকা বাজারে আসবে।
শার্শা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) কাজী নাজিব হাসান জানান, বেলতলা বাজার দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের একটি গুরুত্বপূর্ণ আমের বাজার। এটি দেশের অধিকাংশ জেলার আমের চাহিদা মেটানোর পাশাপাশি বিদেশেও রপ্তানি হচ্ছে।