যশোরের শার্শা উপজেলার বাগুড়ী বেলতলার আমবাজারে প্রশাসনের নির্ধারিত সময়ের আগেই হিমসাগর আমের সরবরাহ শুরু হয়েছে। প্রচণ্ড রোদ, অনাবৃষ্টি এবং তীব্র গরমে আম গাছে পেকে গিয়ে মাটিতে ঝরে পড়ায় বিপাকে পড়েছেন স্থানীয় আমচাষিরা।
উপজেলা প্রশাসনের নির্ধারিত বাজারজাতকরণ ক্যালেন্ডার অনুযায়ী, হিমসাগর আম বাজারে তুলতে হবে আগামী ২১ মে থেকে। তবে প্রকৃতির বিরূপ প্রভাবে অনেক আম এরই মধ্যে পেকে গাছে ঝরতে শুরু করেছে। এতে চাষিরা একদিকে যেমন আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়ছেন, অন্যদিকে প্রশাসনের ভ্রাম্যমাণ আদালতের ভয়ে বাজারে আম তুলতেও সাহস পাচ্ছেন না।
বিষয়টি আমচাষিরা স্থানীয় কৃষি বিভাগকে জানালে বৃহস্পতিবার (১৫ মে) দুপুরে শার্শা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ডা. নাজিব হাসান বাগুড়ী বেলতলার আমবাজার ও বাগান পরিদর্শন করেন। তিনি জানান, “আমের স্বাভাবিক পাকাবস্থায় বাজারজাত নিশ্চিত করতে এবং কেমিক্যাল দিয়ে পাকানো ঠেকাতে নির্ধারিত সময় ঠিক করা হয়েছে। তবে চাষিদের সমস্যার বিষয়টিও আমরা গুরুত্বসহকারে বিবেচনা করছি।”
চাষি আমির হোসেন জানান, “আম গাছেই পেকে ঝরছে, অথচ প্রশাসনের নির্ধারিত সময় আসতে এখনো ৭ দিন বাকি। আমরা যদি এখন আম না পাড়ি, তাহলে সব আম মাটিতে পড়ে যাবে। এতে আমাদের বিশাল ক্ষতি হবে।”
আরেক চাষি হাসান জানান, তার বাগানের অনেক হিমসাগর আম ইতোমধ্যে পেকে গেছে। উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা তার জন্য আম বাজারজাতকরণের অনুমতি দিলেও বাজারে গিয়ে তিনি বিপাকে পড়েছেন। আড়তদাররা জরিমানার ভয় দেখিয়ে এসব আম কিনতে আগ্রহ দেখাচ্ছেন না।
শার্শা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা দীপক কুমার সাহা বলেন, “একটি গাছে সব আম একসাথে পাকে না। যেসব আম পেকে গেছে, সেগুলোর জন্য চাষিদের আবেদন অনুযায়ী আমরা বাগান পরিদর্শন করে বাজারজাতকরণের অনুমতি দিচ্ছি। তবে অপাকা আমে যেন কেউ কেমিক্যাল ব্যবহার না করে, সেদিকে কড়া নজর রাখা হচ্ছে।”
চাষিদের দাবি, হিমসাগর আমের বাজারজাতকরণের নির্ধারিত সময় কয়েকদিন এগিয়ে আনা হলে তারা বড় ধরনের ক্ষতির হাত থেকে বাঁচতে পারবেন।