সাপাহার (নওগাঁ), ২২ মে ২০২৫: জেলা প্রশাসনের ‘ম্যাঙ্গো ক্যালেন্ডার’ অনুযায়ী বৃহস্পতিবার থেকে সাপাহার উপজেলায় গুটি আম সংগ্রহ শুরু হয়েছে। তবে বাণিজ্যিক বাগানের আম এখনো পুরোপুরি পাকেনি, ফলে বাজারে ক্রেতা-বিক্রেতার ভিড় তেমন নেই। স্থানীয় ব্যবসায়ীদের মতে, ৩০ মে থেকে গোপালভোগ বাজারে আসার পর আমের হাট জমে উঠবে।
সকালে সাপাহার উপজেলা সদরের পাইকারি আম বাজারে দেখা গেছে, বেচাকেনা প্রায় নেই বললেই চলে। সকাল ৯টা পর্যন্ত মাত্র কয়েক মণ আম বিক্রি হয়েছে। বাজারে চাষি ও পাইকারদের পূর্বের সেই সক্রিয়তা নেই। স্থানীয় ব্যবসায়ী বুলবুল হোসেন বলেন, “বাণিজ্যিক বাগানের আম এখনো পাকেনি। বাড়ির আঙিনায় বা ছোট পরিসরে চাষ হওয়া গুটি আমই কেউ কেউ বাজারে আনছেন। এসব আম ৮০০ থেকে ১২০০ টাকা মণ দরে বিক্রি হচ্ছে।”
বাজারে বর্তমানে অল্প পরিমাণ গুটি আম আসছে, যা মূলত আচার তৈরিতে ব্যবহৃত হচ্ছে। সাপাহার আম আড়তদার সমবায় সমিতির সাধারণ সম্পাদক ইমাম হোসেন রিফাত জানান, “আম্রপালি, নাক ফজলি, হাড়িভাঙা, বারি আম-৪ ও গৌড়মতি—এগুলো সাপাহারের প্রধান আমের জাত। এসব জাত জুনের মাঝামাঝি পাকবে। আম্রপালি বাজারে এলে হাট জমে উঠবে।”
এবার থেকে প্রশাসনের নির্দেশনায় ৪৮ কেজিকে এক মণ হিসেবে বেচাকেনা হচ্ছে, যার মধ্যে ৩ কেজি ক্যারেটের ওজন। এ নিয়ে চাষিদের মধ্যে কিছুটা অসন্তোষ রয়েছে। পাইকার রবিউল ইসলাম জানান, তিনি সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত ১৫ মণ গুটি আম ৭৬০ থেকে ৮৬০ টাকা মণ দরে কিনেছেন।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সেলিম আহমেদ বলেন, “নির্ধারিত সময়ের আগে অপরিপক্ব আম সংগ্রহ বা বাজারজাত করা যাবে না। তবে আবহাওয়ার কারণে কোনো জাতের আম আগে পাকলে কৃষি বিভাগের সুপারিশে তারিখ পুনঃনির্ধারণ করা হবে।” তিনি আরও জানান, আমে রাসায়নিক ব্যবহার রোধে এবং সঠিক সময়ে বাজারজাত নিশ্চিত করতে প্রশাসনের কঠোর নজরদারি থাকবে।
জেলা প্রশাসনের ম্যাঙ্গো ক্যালেন্ডার অনুযায়ী, ২৮ মে থেকে গোপালভোগ, ২ জুন থেকে হিমসাগর, ১০ জুন থেকে ল্যাংড়া ও হাড়িভাঙা, ১৮ জুন থেকে আম্রপালি, এবং পরবর্তীতে ফজলি, বারি আম-৪, গৌড়মতি ও অন্যান্য জাতের আম সংগ্রহ শুরু হবে। সঠিক সময়ে আম বাজারজাত করতে প্রশাসন, ব্যবসায়ী ও চাষিদের সম্মিলিত সহযোগিতার আহ্বান জানানো হয়েছে।