নিজস্ব প্রতিবেদক:
সারা দেশে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেটের গ্রাহক পর্যায়ের মূল্য কমিয়েছে সরকার। ‘এক দেশ, এক রেট’ নীতিমালার আওতায় বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি) নতুন ট্যারিফ ঘোষণা করেছে, যা আগামী ১ জুলাই থেকে কার্যকর হবে। যদিও সরকার এটিকে জনগণের জন্য স্বস্তির উদ্যোগ হিসেবে উপস্থাপন করেছে, তবে খাতসংশ্লিষ্টদের মধ্যে রয়েছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া।
নতুন নিয়ম অনুযায়ী, সর্বোচ্চ ১:৮ কনটেনশন রেশিওতে
এই মূল্য মহানগর থেকে ইউনিয়ন পর্যন্ত সব এলাকায় এককভাবে প্রযোজ্য হবে। আগে ৫ এমবিপিএস-এর জন্য গ্রাহকদের গুণতে হতো ৫০০ টাকা, যা এখন কমিয়ে ৪০০ টাকা করা হয়েছে।
বিটিআরসি জানায়, এই হার আগামী ৫ বছরের জন্য প্রাথমিকভাবে কার্যকর থাকবে। পাশাপাশি নতুন নিয়ম অনুযায়ী, কোনও গ্রাহকের সংযোগ টানা ৫ দিন বন্ধ থাকলে তার মাসিক বিলের ৫০% ছাড় দিতে হবে। ১০ দিন সংযোগ বিচ্ছিন্ন থাকলে ২৫% এবং ১৫ দিন বা তার বেশি হলে পুরো বিল মওকুফ করতে হবে।
তবে অনেক ইন্টারনেট সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান (আইএসপি) এই নির্ধারিত রেটের চেয়েও কম দামে সেবা দিয়ে আসছে বলে দাবি করেছে ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডার অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (আইএসপিএবি)। তাদের মতে, সরকারি হস্তক্ষেপে ‘এক রেট’ প্রথা বাস্তবায়ন হলে ক্ষুদ্র আইএসপি ও গ্রামীণ এলাকায় টিকে থাকা কঠিন হয়ে পড়বে। পাশাপাশি সেবার মান ও কভারেজ নিয়েও দেখা দিতে পারে বড় সংকট।
আইএসপিগুলোর দাবি, মূল সমস্যা হচ্ছে ভৌগোলিক বৈষম্য এবং সার্ভিস ডেলিভারির খরচ। শহর ও গ্রামে একই দামে সেবা দেওয়া বাস্তবে অনেক সময় সম্ভব নয়। এছাড়া বিটিআরসি যেসব শর্ত আরোপ করেছে, তা মানতে গেলে প্রয়োজন হবে বাড়তি বিনিয়োগ, যা অনেক আইএসপির পক্ষেই বাস্তবায়নযোগ্য নয়।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ইন্টারনেট সেবাকে মানুষের নাগালে আনতে সাশ্রয়ী মূল্য নির্ধারণ গুরুত্বপূর্ণ হলেও, সেবার মান ও টেকসই অবকাঠামো নিশ্চিতে সরকারের পাশাপাশি বেসরকারি খাতের সক্ষমতা বিবেচনায় নেওয়াও জরুরি।