আসন্ন ঈদকে সামনে রেখে বগুড়ার শেরপুরে বেড়েছে দুধ ও ঐতিহ্যবাহী দইয়ের দাম। সরবরাহ কমে যাওয়ায় দুধের দাম অস্বাভাবিকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে, যার সরাসরি প্রভাব পড়েছে জনপ্রিয় বগুড়ার দইয়ের ওপর।
বগুড়ার দই বিশ্বব্যাপী ক্ষ্যাতি পেলেও দইয়ের আদি উৎপত্তি মূলত বগুড়ার শেরপুর উপজেলায়। বগুড়ার দই ভৌগোলিক নির্দেশক (জিআই) পণ্যের স্বীকৃতি পেয়েছে। শিল্প মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন প্রতিষ্ঠান পেটেন্ট, ডিজাইন ও ট্রেডমার্কস অধিদপ্তর (ডিপিডিটি) ২০২৩ সালের ২৫ জুন এ অনুমোদন দেয়।
ইতিহাস সুত্রে জানা যায়, বগুড়ার দই দেশ ও দেশের বাইরে খুব জনপ্রিয়। এর খ্যাতি মূলত ব্রিটিশ আমল থেকে সর্বত্র ছড়িয়ে পরে। ষাটের দশকের প্রথম ভাগে ব্রিটেনের রানী দ্বিতীয় এলিজাবেথ থেকে শুরু করে মার্কিন মুল্লুকেও গেছে বগুড়ার দই। পাকিস্তানের তদানীন্তন প্রেসিডেন্ট আইয়ুব খান ব্রিটেন ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কর্তাদের সহানুভূতি পেতে পাঠিয়েছিলেন এই দই । জানা যায়, বগুড়ার শেরপুরে প্রথম দই তৈরি হয় প্রায় আড়াইশ বছর আগে। তৎকালীন বগুড়ার শেরপুরের ঘোষ পরিবারের ঘেটু ঘোষ প্রথম দই তৈরি আরম্ভ করেন। টক দই তৈরি থেকে বংশ পরম্পরায় তা চিনিপাতা বা মিষ্টি দইয়ে রূপান্তরিত হয়।
শেরপুরের সুনামধন্য এক প্রতিষ্ঠানে গিয়ে দেখা যায়, শাহী দই বিক্রি হচ্ছে- ৩০০ টাকায় যা ঈদের আগে বিক্রি হতো ২৮০ টাকায়, স্পেশাল দই বিক্রি হতো- ২৫০ এবং রেগুলার দই ২২০ টাকায়। অন্যন্য দোকানগুলোতে সাধারণ মানের দই বিক্রি হচ্ছে ১৭০-১৮০ টাকায়।
বগুড়ার শেরপুরে দুধের বাজার ঘুরে দেখা যায়, গত সপ্তাহে দুধের দাম ছিল ৪০ থেকে ৫০ টাকা লিটার/কেজি চলতি সপ্তাহে বেড়েই চলছে দুধের দাম গত দুদিন আগেও বিক্রি হয়েছে ৭০ টাকা লিটার/কেজি যা আজ বিক্রি হচ্ছে ১০০ থেকে ১০৫ টাকায়।
দাম বাড়ার কারণ হিসেবে জানতে চাইলে এক দুধের ব্যবসায়ী জানান, ঈদের আগে সারা দেশ থেকে দইয়ের চাহিদা বৃদ্ধি পাওয়ায় দুধের চাহিদাও বৃদ্ধি পেয়েছে। উৎপাদনের তুলনায় সরবরাহ কম থাকায় দুধের দাম হু হু করে বেড়ে চলছে।
দইয়ের দাম বৃদ্ধি বিষয়ে জানতে চাইলে এক ব্যবসায়ী জানান, প্রতিবারের মতো ঈদের আগে দুধের দাম বৃদ্ধি, শ্রমিকের মজুরি বৃদ্ধি, খড়িসহ অন্যান্য উপকরণ এর দাম বেড়ে যাওয়ায় বাজারে টিকে থাকতে দুধের দামের সাথে সামঞ্জস্য রেখে বাড়াতে হচ্ছে দইয়ের দাম।
দই কিনতে আসা রেহেনা বেগম জানান, “ঈদের আগে প্রতিবারই দুধ আর দইয়ের দাম বাড়ে, কিন্তু এবার তো সীমা ছাড়িয়ে গেছে। দুধ ১০০-১০৫ টাকা লিটার, আর দইয়ের দামও তেমনি। আমার পরিবারের সবাই দই পছন্দ করে, কিন্তু এখন বাজেটের মধ্যে কেনা কঠিন।
জানা যায়, বগুড়ার শেরপুরে প্রথম দই তৈরি হয় প্রায় আড়াইশ বছর আগে। তৎকালীন বগুড়ার শেরপুরের ঘোষ পরিবারের ঘেটু ঘোষ প্রথম দই তৈরি আরম্ভ করেন। টক দই তৈরি থেকে বংশ পরম্পরায় তা চিনিপাতা বা মিষ্টি দইয়ে রূপান্তরিত হয়।