
শেরপুর (বগুড়া): নীরব ঘাতক 'অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল রেজিস্টেন্স' (AMR)-এর করাল গ্রাস থেকে মানব সমাজকে সুরক্ষিত রাখার প্রত্যয়ে বৃহস্পতিবার (২৩ অক্টোবর) বিকেলে বগুড়ার শেরপুরে এক ব্যতিক্রমী আলোক-আয়োজন অনুষ্ঠিত হলো। স্লোগান ছিল “এসো সবাই মিলে এন্টিমাইক্রোবিয়াল রেজিস্টেন্স প্রতিরোধ গড়ে তুলি”।
ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের বগুড়া জেলা কার্যালয়ের উদ্যোগে ‘এ এম আর স্কুল অ্যাওয়ারনেস অ্যান্ড বুক ডিস্ট্রিবিউশন প্রোগ্রাম ২০২৫’-এর মঞ্চ ছিল যেন আগামীর সুস্থ সমাজের প্রতি অঙ্গীকারের এক সোপান। সামিট স্কুল অ্যান্ড কলেজের হলরুমে ৭৫০ জন কৌতূহলী শিক্ষার্থীর হাতে তুলে দেওয়া হলো AMR সচেতনতার পাঠশালা, যে বইগুলি আগামী দিনে তাদের সচেতনতার মশাল হয়ে উঠবে।

আলোচনা সভায় বক্তারা বর্তমানের একটি কঠিন সত্যকে তুলে ধরেন। তাঁরা বলেন, অ্যান্টিবায়োটিকের যথেচ্ছ ব্যবহার জীবাণুকে দিচ্ছে অপ্রতিরোধ্য ক্ষমতা, যা মানবদেহে সৃষ্টি করছে ওষুধ প্রতিরোধী দুর্ভেদ্য প্রাচীর। এই প্রাচীর ভাঙা না গেলে ভবিষ্যতে সামান্য রোগও ডেকে আনতে পারে মহা বিপদ।
শিক্ষাবিদ ও চিকিৎসকদের কণ্ঠ এক হয়ে শিক্ষার্থীদের আহ্বান জানায়-- স্বাস্থ্যই সম্পদ। নিয়মিত ব্যায়াম, সাতার কাটার মতো অভ্যাস শরীরকে রাখবে প্রস্তুত। আর জীবনদায়ী অ্যান্টিবায়োটিক হবে কেবল রেজিস্টার্ড এমবিবিএস চিকিৎসকের পরামর্শে গ্রহণের মাধ্যমে নিয়ন্ত্রিত, স্বেচ্ছাচারী ব্যবহারে নয়। এই নিয়ন্ত্রণই হবে সুরক্ষার প্রাথমিক অঙ্গীকার।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক মরুময় সরকার উপস্থিত থেকে শিক্ষার্থীদের মাঝে আশার সঞ্চার করেন। বিশেষ অতিথি হিসেবে জ্ঞানালোকে পথ দেখান বগুড়া জেলা শিক্ষা অফিসার রমজান আলী আকন্দ, আর্মি মেডিকেল কলেজ অ্যান্ড হসপিটালের মেডিকেল অফিসার ডা. সুমাইয়া ফেরদৌস, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. তাওহীদ মাহমুদ, সামিট স্কুল অ্যান্ড কলেজের পরিচালক সাইফুল ইসলাম লিপু, এবং শেরপুর ডি. জে. হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক মোহাম্মদ আকতার উদ্দিন বিপ্লব।
সামিট স্কুল অ্যান্ড কলেজের নিবিড় সহযোগিতায় এই অনুষ্ঠানটি কেবল বই বিতরণের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকেনি, বরং এটি হয়ে উঠেছিল ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে একটি নিরাপদ ও স্বাস্থ্যকর পৃথিবী উপহার দেওয়ার সম্মিলিত শপথ।