
ফুলবাড়ী (দিনাজপুর) প্রতিনিধি:
দিনাজপুরের ফুলবাড়ীতে টানা তিনদিনের দমকা হাওয়াসহ ঝড়োবৃষ্টিতে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে কৃষকজীবন। আধাপাকা আমন ধান মাটিতে নুয়ে পড়েছে, পানিতে ডুবে নষ্ট হচ্ছে শীষ। পাশাপাশি আগাম আলু ও সবজিক্ষেতও তলিয়ে গেছে বৃষ্টির পানিতে। ফলে ফসল ঘরে তোলার স্বপ্ন এখন দুশ্চিন্তায় পরিণত হয়েছে কৃষকদের জন্য।
উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, ঝড়োবৃষ্টিতে উপজেলার ৮৮ হেক্টর জমির আমন ধান, ৫ হেক্টর আলু এবং ৬ হেক্টর সবজি ক্ষেতের ক্ষতি হয়েছে। আগামী ৪ নভেম্বর পর্যন্ত এই আবহাওয়া অব্যাহত থাকতে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অফিস, এতে ক্ষতির পরিমাণ আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
চলতি মৌসুমে ফুলবাড়ীতে ১৮ হাজার ১৪৮ হেক্টর জমিতে আমন ধান, ১ হাজার ৮১০ হেক্টর জমিতে আলু, এবং ১ হাজার ৭৫০ হেক্টর জমিতে সবজি চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল। এর মধ্যে আগাম জাতের সবজি চাষ হয়েছে প্রায় ৬৫০ হেক্টর জমিতে।
উপজেলার বিভিন্ন মাঠ ঘুরে দেখা গেছে, আধাপাকা ধানের শীষ পানিতে ডুবে আছে, ফলে ফলন ও গুণগত মান নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। পাশাপাশি আগাম আলু ও সবজিক্ষেতে পানি জমে খেত নষ্ট হচ্ছে।
আলাদীপুর ইউনিয়নের উত্তর রঘুনাথপুর এলাকার কৃষক মহিদুল ইসলাম বলেন,
“দেড় বিঘা জমিতে ধান লাগিয়েছি। কষ্ট করে ধান চাষ করলাম, ক’দিন পর কাটার সময় ছিল। এখন বৃষ্টিতে ধান মাটিতে নুয়ে পড়েছে, শীষ ভিজে যাচ্ছে। আলুর খেতেও পানি জমে নষ্ট হচ্ছে।”
দিনাজপুর আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় (৩১ অক্টোবর সকাল ৬টা থেকে ১ নভেম্বর সকাল ৬টা পর্যন্ত) ৪৬ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। এদিন সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ২২.৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস, আর বাতাসের গতি ঘণ্টায় ৩ থেকে ১৮ কিলোমিটার পর্যন্ত ছিল।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ সাইফ আব্দুল্লাহ বলেন,
“৮৮ হেক্টর জমির ধান এবং ৫ হেক্টর আলু ও ৬ হেক্টর শাকসব্জির ক্ষতি হয়েছে। কৃষকদের পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে—যেসব ধান শুয়ে পড়েছে, সেগুলো গোছা করে বেঁধে দিতে। এতে ক্ষতি কিছুটা কমানো সম্ভব হবে।”