ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে চলমান উত্তেজনা নতুন মাত্রা পেয়েছে। ভারত দাবি করেছে, তারা পাকিস্তান ও পাকিস্তান-শাসিত কাশ্মীরের নয়টি স্থানে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে, যাকে তারা “অপারেশন সিন্দুর” নামে অভিযান। এই হামলা গত ২২ এপ্রিল ভারত-শাসিত কাশ্মীরের পাহালগামে ২৬ জন পর্যটকের হত্যাকাণ্ডের প্রতিশোধ হিসেবে চালানো হয়েছে, যার জন্য ভারত পাকিস্তানকে দায়ী করছে। অন্যদিকে, পাকিস্তান জানিয়েছে, ভারত ছয়টি স্থানে হামলা চালিয়েছে, যাতে আটজন নিহত ও ৩৫ জন আহত হয়েছে। পাকিস্তান আরও দাবি করেছে, তারা ভারতের পাঁচটি যুদ্ধবিমান ভূপাতিত করেছে।
মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও তার এক্স হ্যান্ডেলে বলেছেন, “যুক্তরাষ্ট্র ভারত-পাকিস্তানের পরিস্থিতি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছে। আশা করি, এই সংঘাত দ্রুত সমাপ্ত হবে।” তিনি জানান, যুক্তরাষ্ট্র উভয় দেশের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পও একইভাবে দ্রুত সমাধানের আশা প্রকাশ করেছেন।
এই সংঘাতের মূল কারণ পাহালগামে সন্ত্রাসী হামলা, যেখানে ২৬ জন নিহত হয়েছেন। ভারত এই হামলার জন্য পাকিস্তান-ভিত্তিক সন্ত্রাসী গোষ্ঠীকে দায়ী করেছে, যদিও পাকিস্তান এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে। এরপর থেকে উভয় দেশ কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করেছে, সীমান্ত বন্ধ করেছে এবং ইন্দাস জলচুক্তির মতো গুরুত্বপূর্ণ চুক্তি স্থগিত করেছে। নিয়ন্ত্রণরেখা (এলওসি) বরাবর উভয় পক্ষের মধ্যে গোলাগুলির ঘটনাও ঘটেছে।
যুক্তরাষ্ট্র, চীন এবং জাতিসংঘ উভয় দেশকে সংযমী হওয়ার আহ্বান জানিয়েছে। জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ এই ইস্যুতে বন্ধদ্বার বৈঠক করেছে। চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই পাকিস্তানের উপ-প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনায় সংঘাতের ঝুঁকি সম্পর্কে সতর্ক করেছেন।
বিশ্লেষকরা সতর্ক করেছেন, দুই পারমাণবিক শক্তিধর দেশের মধ্যে এই সংঘাত বড় ধরনের যুদ্ধে রূপ নিতে পারে। ভারত ২৪৪টি এলাকায় নিরাপত্তা মহড়া চালাচ্ছে, এবং পাকিস্তান তার সামরিক সক্ষমতা প্রদর্শনের জন্য ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা করেছে।
উভয় দেশের দাবি স্বাধীনভাবে যাচাই করা যায়নি। পরিস্থিতি এখনও তরল, এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় শান্তিপূর্ণ সমাধানের জন্য চাপ দিচ্ছে।
সূত্র: রয়টার্স, এনডিটিভি, আল জাজিরা, এবং এক্স-এ পোস্ট