বগুড়ার শেরপুর উপজেলার শাহবন্দেগী ইউনিয়ন পরিষদে এক সপ্তাহ ধরে কার্যত স্থবিরতা বিরাজ করছে। চেয়ারম্যান দুর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগে সাময়িক বরখাস্ত হওয়ার পর এখনো প্যানেল চেয়ারম্যান কিংবা প্রশাসক দায়িত্ব গ্রহণ না করায় ইউনিয়নের সব ধরনের সেবা কার্যক্রম বন্ধ হয়ে গেছে।
২৭টি গ্রাম ও ৩৩ হাজারেরও বেশি ভোটারের এই ইউনিয়নে জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধন, নাগরিকত্ব সনদ, ওয়ারিশান সনদ, ট্রেড লাইসেন্সসহ প্রতিদিনের জরুরি সেবা না পেয়ে মানুষ পড়েছেন চরম ভোগান্তিতে। সাধারণ মানুষের পাশাপাশি সরকারের চলমান উন্নয়ন প্রকল্পও থেমে গেছে।
স্থানীয় বিধবা নারী হালিমা খাতুন ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, “ওয়ারিশান সনদ ছাড়া জমির কাজ এগোচ্ছে না। প্রতিদিন আসি, কিন্তু কোনো সমাধান নেই।”
কৃষক আব্দুল রহমান জানান, “ছেলের পড়াশোনার জন্য নাগরিক সনদ দরকার। কিন্তু ইউনিয়ন পরিষদে এক সপ্তাহ ধরে কোনো কাজই হচ্ছে না।”
এদিকে ইউপি সদস্য জাহাঙ্গীর আলম জানিয়েছেন, পরিষদের ১০ জন সদস্যের মধ্যে ৮ জন তাকে প্যানেল চেয়ারম্যান হিসেবে মনোনীত করে স্বাক্ষরিত আবেদন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে জমা দিয়েছেন।
মহিলা সদস্য নাসিমা আক্তারের ভাষ্য, “মানুষ প্রতিদিন আমাদের কাছে ছুটে আসছে, কিন্তু দায়িত্বপ্রাপ্ত কেউ না থাকায় আমরা তাদের সাহায্য করতে পারছি না।”
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আশিক খান বলেন, “পরিস্থিতি জেলা প্রশাসককে জানানো হয়েছে। প্রশাসক নিয়োগ দেওয়া হলে ২-৩ দিনের মধ্যেই পরিষদের কার্যক্রম স্বাভাবিক হয়ে যাবে।”
প্রসঙ্গত, গত বছরের সেপ্টেম্বরে চেয়ারম্যান আবুল কালাম আজাদের বিরুদ্ধে প্রায় ১ কোটি ৩০ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ তোলেন ইউপি সদস্যরা। দীর্ঘ তদন্ত শেষে অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় সম্প্রতি তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়।