1. dailybogratimes@gmail.com : admin :
সংবিধান সংস্কারের জন্য গণভোটের পথে বাংলাদেশ, গেজেট প্রকাশিত - Daily Bogra Times
বুধবার, ২৬ নভেম্বর ২০২৫, ০৯:৪৪ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম

সংবিধান সংস্কারের জন্য গণভোটের পথে বাংলাদেশ, গেজেট প্রকাশিত

নিউজ ডেস্কঃ-
  • আপডেট সময়ঃ বৃহস্পতিবার, ১৩ নভেম্বর, ২০২৫
  • ৩৯ Time View
সংবিধান সংস্কারের জন্য গণভোটের পথে বাংলাদেশ, গেজেট প্রকাশিত
print news

ঢাকা, ১৩ নভেম্বর: সরকার বৃহস্পতিবার (১৩ নভেম্বর) জুলাই জাতীয় সনদ (সংবিধান সংস্কার) বাস্তবায়ন আদেশ, ২০২৫ সরকারি গেজেটে প্রকাশ করেছে। এই আদেশ প্রকাশের মাধ্যমে সংবিধান সংস্কারের জন্য আনুষ্ঠানিক প্রক্রিয়া শুরু হলো।

আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের লেজিসলেটিভ ও সংসদ বিষয়ক বিভাগ থেকে গেজেট প্রকাশ করা হয়। এর আগে আদেশটি উপদেষ্টা পরিষদ অনুমোদন করে। প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস রাষ্ট্রপতির কাছে পাঠানোর আগে আদেশের সারসংক্ষেপে স্বাক্ষর করেন।

আদেশে বলা হয়েছে, ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্টে সংঘটিত ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থান বাংলাদেশের জনগণের সার্বভৌম ক্ষমতা ও অভিপ্রায়ের প্রকাশ ঘটিয়েছে। ওই গণঅভ্যুত্থানের ফলে ৫ আগস্ট তৎকালীন ফ্যাসিবাদী সরকারের পতন ঘটে, ৬ আগস্ট জাতীয় সংসদ ভেঙে দেওয়া হয় এবং ৮ আগস্ট বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত হয়।

সংবিধান, নির্বাচন, জনপ্রশাসন, বিচার বিভাগ, পুলিশ প্রশাসন ও দুর্নীতি দমন ব্যবস্থায় সংস্কার প্রণয়নের লক্ষ্যে অন্তর্বর্তী সরকার ছয়টি সংস্কার কমিশন গঠন করে। কমিশনগুলো তাদের প্রতিবেদন সরকারের নিকট পেশ করে। সরকার এই সুপারিশসমূহের বিষয়ে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন গঠন করে এবং সব রাজনৈতিক দল ও জোটের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে জুলাই জাতীয় সনদ ২০২৫ প্রণয়ন করে। রাজনৈতিক দল ও জোটগুলো উক্ত সনদে স্বাক্ষর ও বাস্তবায়নের অঙ্গীকার করে।

আদেশে বলা হয়েছে, সংবিধান সংস্কার বাস্তবায়নের জন্য গণভোট অনুষ্ঠিত হবে। ভোটারদের জন্য ব্যালটে উপস্থাপিত প্রশ্ন হবে:

“আপনি কি জুলাই জাতীয় সনদ (সংবিধান সংস্কার) বাস্তবায়ন আদেশ, ২০২৫ এবং এতে লিপিবদ্ধ সংবিধান সংস্কারের প্রস্তাবসমূহের প্রতি সম্মতি জ্ঞাপন করছেন?” (হ্যাঁ/না)

প্রস্তাবগুলোর মধ্যে রয়েছে:

  • নির্বাচনকালীন তত্বাবধায়ক সরকার, নির্বাচন কমিশন ও অন্যান্য সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান জুলাই সনদে বর্ণিত প্রক্রিয়ার আলোকে গঠন করা হবে
  • আগামী জাতীয় সংসদ দুই কক্ষবিশিষ্ট হবে, উচ্চকক্ষে ১০০ সদস্য থাকবে এবং সংবিধান সংশোধনের জন্য উচ্চকক্ষের সংখ্যাগরিষ্ঠ সদস্যের অনুমোদন প্রয়োজন হবে।
  • সংসদে নারীর প্রতিনিধি বৃদ্ধি, বিরোধী দল থেকে ডেপুটি স্পিকার ও সংসদীয় কমিটির সভাপতি নির্বাচন, প্রধানমন্ত্রীর মেয়াদ সীমিতকরণ, রাষ্ট্রপতির ক্ষমতা বৃদ্ধি, মৌলিক অধিকার ও বিচার বিভাগের স্বাধীনতা নিশ্চিত করা হবে।
  • অন্যান্য ৩০টি গুরুত্বপূর্ণ সংস্কার রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী বাস্তবায়ন করা হবে।

গণভোটে সংখ্যাগরিষ্ঠ ভোট (হ্যাঁ) প্রাপ্ত হলে, নির্বাচিত সংসদ সদস্যদের সমন্বয়ে সংবিধান সংস্কার পরিষদ গঠন করা হবে। পরিষদ ১৮০ কার্যদিবসের মধ্যে সংবিধান সংস্কার সম্পন্ন করবে এবং সংবিধান সংশোধন বিষয়ে সকল ক্ষমতা প্রয়োগ করবে। পরিষদ গঠনের সময় নির্বাচিত সদস্যরা জাতীয় সংসদের সদস্য হিসেবেও দায়িত্ব পালন করবেন।

পরিষদের কার্যধারা সম্পর্কে আদেশে বলা হয়েছে:

  • পরিষদের প্রথম অধিবেশনে সভাপ্রধান ও উপ-সভাপ্রধান নির্বাচন হবে।
  • ন্যূনতম ৬০ সদস্য উপস্থিতি প্রয়োজন হবে।
  • সংবিধান সংশোধনের প্রস্তাব অনুমোদনের জন্য সংখ্যাগরিষ্ঠ ভোট প্রয়োজন হবে; সমসংখ্যক ভোটের ক্ষেত্রে সভাপ্রধানের ভোট নির্ণায়ক হবে।
  • পরিষদের কার্যধারার বৈধতা, সদস্যদের বিশেষ অধিকার ও দায়মুক্তি জাতীয় সংসদ ও সংসদ-সদস্যদের অনুরূপ হবে।

আদেশে আরও বলা হয়েছে, সংবিধান সংস্কার সম্পন্ন হওয়ার পর যে সংস্কারগুলো অবিলম্বে কার্যকর করা সম্ভব, সেগুলো কার্যকর করা হবে। উচ্চকক্ষ গঠনের বিষয় ও অন্যান্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণে সরকার নির্দেশনা জারি করতে পারবে।

সংবিধান সংস্কার চূড়ান্ত ও প্রকাশ:
পরিষদ কর্তৃক গৃহীত সংবিধান সংস্কার চূড়ান্ত হবে এবং তা সরকারি গেজেটে প্রকাশিত হবে, অন্য কোনো অনুমোদন বা সম্মতির প্রয়োজন হবে না।

আদেশে উল্লেখিত কিছু ধারা অবিলম্বে কার্যকর হবে, এবং গণভোটের ইতিবাচক ফলাফল সাপেক্ষে অন্যান্য ধারা কার্যকর হবে।

এভাবে জুলাই জাতীয় সনদ ২০২৫ বাস্তবায়নের মাধ্যমে বাংলাদেশে সংবিধান সংস্কারের কার্যক্রম আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হলো।

শেয়ার করুন

আরো খবর দেখুন
© All rights reserved © Daily Bogra Times/2025
Theme Customized BY LatestNews