শেরপুর, বগুড়া: বগুড়ার শেরপুর উপজেলায় গ্রামীণ যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নে প্রায় ১৭ কোটি টাকা ব্যয়ে একটি নতুন প্রকল্প অনুমোদন পেয়েছে। “বৃহত্তর পাবনা ও বগুড়া জেলার গ্রামীণ অবকাঠামো উন্নয়ন (২য় পর্যায়) (১ম সংশোধিত)” শীর্ষক এই প্রকল্পের আওতায় ১৪টি রাস্তা নির্মাণ ও সংস্কারের জন্য দরপত্র আহ্বান করা হয়েছে। এই উদ্যোগের ফলে উপজেলার গ্রামীণ যোগাযোগ ব্যবস্থায় নতুন করে প্রাণ ফিরবে বলে আশা করা হচ্ছে।

স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) এই প্রকল্পের তত্ত্বাবধান করছে। এলজিইডি কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, প্রকল্পের আওতায় মোট ১৪.৪৯৯ কিলোমিটার রাস্তা নির্মাণ ও সংস্কার করা হবে। এর জন্য প্রাক্কলিত ব্যয় ধরা হয়েছে ১৬ কোটি ৯৩ লাখ ১২ হাজার ২২০ টাকা।

এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো— রনবীরবালা-ঝাঞ্জর হাট-এলাঙ্গী ইউপি সড়ক: দৈর্ঘ্য ২.৫১৯ কিলোমিটার। সালফা বাজার-খামারকান্দি ইউপি অফিস সড়ক: দৈর্ঘ্য ২.১৪৫ কিলোমিটার। খামারকান্দি ইউপি-ঘোড়দৌড় হাট-পর্বভবানীপুর-আমরুল ইউপি সড়ক: দৈর্ঘ্য ২.৫২০ কিলোমিটার। বথুয়াবাড়ি বাজার-খানপুর ইউপি সড়ক: দৈর্ঘ্য ১.৪২৫ কিলোমিটার। ঘোঘাহাট (বটতলা) বিশ্বহাট-আটাইল-ভবানীপুর ইউপি সড়ক: দৈর্ঘ্য ০.৪২০ কিলোমিটার। সিমাবাড়ি ইউপি-জোরগাছা ব্রিজ সড়ক: দৈর্ঘ্য ০.৯০৫ কিলোমিটার। সালফা বাজার-ঝাঞ্জর হাট-এলাঙ্গী ইউপি সড়ক: দৈর্ঘ্য ০.৭০০ কিলোমিটার। বোয়ালকান্দি-নলবারিয়া সড়ক: দৈর্ঘ্য ১.০০০ কিলোমিটার। চাকপাহাড়ী-খিদিরহাসড়া সড়ক: দৈর্ঘ্য ০.৬৬৫ কিলোমিটার। চাকখাগা-বিমজানী সড়ক: দৈর্ঘ্য ০.৫০০ কিলোমিটার। শাকদহ-খানপুর সড়ক: দৈর্ঘ্য ০.৮৭০ কিলোমিটার। গজারিয়া-বড়ইতলী সড়ক: দৈর্ঘ্য ০.৫০০ কিলোমিটার। ঘোড়দৌড়-নগর সড়ক: দৈর্ঘ্য ০.৫০০ কিলোমিটার। মাগুরাতৈর গ্রাম সড়ক: দৈর্ঘ্য ০.৭৫০ কিলোমিটার।

বর্তমানে শেরপুর উপজেলায় মোট ২৭৫টি রাস্তা রয়েছে, যার মোট দৈর্ঘ্য ৬৮০ কিলোমিটার। এর মধ্যে ৩৪১ কিলোমিটার পাকা, ২৭৬ কিলোমিটার কাঁচা এবং ৬০ কিলোমিটার সোলিং করা। আগামী ২০২৫-২৬ অর্থবছরে আরও ২২টি রাস্তা মেরামতের জন্য প্রস্তাবনা প্রস্তুত করা হয়েছে।

একই সাথে, শেরপুর উপজেলায় ৯২টি নতুন কাঁচা রাস্তা উন্নয়নের জন্য একটি প্রস্তাবনা মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। এই প্রস্তাবটি বগুড়া উন্নয়ন প্রকল্পের অংশ, যার জন্য মোট ৩,৫০০ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে।

দীর্ঘদিন ধরে খারাপ অবস্থায় থাকা কিছু গুরুত্বপূর্ণ রাস্তার সংস্কারের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। শাহবন্দেগি ইউনিয়নের খন্দকার টোলা থেকে সাধুবাড়ী পাকারমাথা এবং কুসুম্বি ইউনিয়নের বাসস্ট্যান্ড থেকে কেল্লা পশি মেলা পর্যন্ত রাস্তা দুটি জরাজীর্ণ অবস্থায় থাকায় প্রতিনিয়ত ছোট-বড় দুর্ঘটনা ঘটছিল।

শেরপুর উপজেলা এলজিইডি প্রকৌশলী আব্দুল মজিদ জানিয়েছেন, স্থানীয় চাহিদার ভিত্তিতে এসব প্রস্তাবনা মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। খন্দকার টোলা থেকে সাধুবাড়ী রাস্তার জন্য ২ কিলোমিটার আরসিসি ঢালাইয়ের প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। অনুমোদন পেলে দ্রুত কাজ শুরু হবে।

শেরপুর সড়ক উপ-বিভাগের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী শেখ রুহুল আজম জানান, বাসস্ট্যান্ড থেকে কেল্লা পশি মেলা রাস্তার সংস্কার কাজ চলমান। এই রাস্তার জন্য প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে এবং পরিদর্শন প্রতিবেদন জমা দেওয়া হয়েছে। অনুমোদন পেলে দ্রুত কাজ শুরু হবে।