শেরপুর, বগুড়া, ১১ সেপ্টেম্বর ২০২৫: নির্বাচনী প্রতিশ্রুতির আলোয় আলোকিত একসময়ের জনপ্রিয় স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান, বগুড়ার শেরপুর উপজেলার শাহবন্দেগী ইউনিয়নের মো. আবুল কালাম আজাদের অধ্যায় এক নিদারুণ অভিযোগে এসে থেমে গেল। দুর্নীতি ও নানা অনিয়মের অভিযোগে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয় তাকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করেছে।
গত বৃহস্পতিবার দুপুরে জারি হওয়া এক প্রজ্ঞাপনে এই আদেশ চূড়ান্ত হয়, যা আগামী রবিবার থেকে কার্যকর হবে।
প্রজ্ঞাপনে স্পষ্টভাবে উল্লেখ করা হয়েছে, ইউনিয়ন পরিষদের বিভিন্ন প্রকল্পের কাজ অসমাপ্ত থাকা এবং বিভিন্ন আর্থিক অনিয়মের অভিযোগ দীর্ঘকাল ধরেই চেয়ারম্যান আজাদের বিরুদ্ধে উত্থাপিত হচ্ছিল। জেলা প্রশাসকের সুপারিশে গঠিত একটি তদন্ত কমিটি এই অভিযোগগুলোর সত্যতা খুঁজে পায়। এরপর স্থানীয় সরকার (ইউনিয়ন পরিষদ) আইন, ২০০৯-এর ৩৪(৪)(খ) ও (ঘ) ধারার আলোকে এই কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া হয়।
মন্ত্রণালয়ের প্রজ্ঞাপনে আরও বলা হয়েছে, চেয়ারম্যান আবুল কালাম আজাদের কর্মকাণ্ড কেবল ইউনিয়ন পরিষদের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকেনি, বরং তা জনস্বার্থেরও পরিপন্থী প্রমাণিত হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে, কর্তৃপক্ষের অনুমোদনে জনস্বার্থে অবিলম্বে এই বরখাস্তের সিদ্ধান্ত কার্যকর করা হলো।
শেরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আশিক খান নিশ্চিত করেছেন, তিনি বলেন, “বৃহস্পতিবার দুপুরে আমরা প্রজ্ঞাপন হাতে পেয়েছি। আগামী রবিবার থেকে এটি কার্যকর হবে।”
উল্লেখ্য, ২০২১ সালের ১১ নভেম্বর দ্বিতীয় দফায় অনুষ্ঠিত ইউপি নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে বিপুল ভোটে জয়লাভ করেছিলেন আবুল কালাম আজাদ। তিনি বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের বগুড়া জেলা শাখার সহ-সভাপতির দায়িত্বেও ছিলেন।
তবে, নির্বাচনের পরপরই ইউপি সদস্যদের একাংশ তার বিরুদ্ধে স্বেচ্ছাচারিতা ও দুর্নীতির অভিযোগ তুলতে শুরু করেন। সচিবের সঙ্গে চেয়ারম্যানের ঘনিষ্ঠতার কারণে তারা প্রকাশ্যে প্রতিবাদ জানাতে দীর্ঘ সময় ধরে দ্বিধাগ্রস্ত ছিলেন বলে জানা গেছে। অবশেষে, ২০২৪ সালের সেপ্টেম্বরে ইউনিয়নের ৮ জন ইউপি সদস্য সম্মিলিতভাবে চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে ১ কোটি ৩০ লাখ টাকা আত্মসাতের লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। দীর্ঘ তদন্তের পর অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় এই বরখাস্তের ঘটনা ঘটল।