(দিনাজপুর) প্রতিনিধি:
দিনাজপুরের ফুলবাড়ী উপজেলায় আগাম আমন ধান কাটাই-মাড়াই শেষ হতেই কৃষকেরা মাঠে নামেছেন আগাম আলু চাষে। যদিও গতবার আলু চাষ থেকে আশা অনুযায়ী লাভ পাননি, তবু আগামী বছরের ভালো দামের প্রত্যাশায় এবার আগাম আলু চাষে মনোনিবেশ করেছেন তারা।
উপজেলার দৌলতপুর, খয়েরবাড়ী, শিবনগরসহ বিভিন্ন এলাকায় ইতিমধ্যেই হল্যান্ডার, রোমানা, ক্যারেজ, সাদা ও লাল পাটনাই জাতের আলু আগাম লাগানোর কাজ শুরু হয়েছে। জমি প্রস্তুতি, সার প্রয়োগ ও অন্যান্য প্রস্তুতি নিয়ে কৃষকেরা ব্যস্ত সময় পার করছেন। উপজেলার প্রায় ৪০ শতাংশ জমিতে ইতোমধ্যেই আগাম আলু লাগানো হয়েছে।
খয়েরবাড়ী ইউনিয়নের জমিদারপাড়া গ্রামের আজিবর সরকার জানিয়েছেন, “গতবার ধান কাটার পর ৪০ শতক জমিতে আলু চাষ করেছিলাম। কিছুটা লোকসান হয়েছিল, কিন্তু এবার একই পরিমাণ জমিতে ক্যারেট জাতের আলু চাষে মনোযোগ দিচ্ছি। আশা করি এবার লাভবান হব।”

দৌলতপুর ইউনিয়নের কৃষক আকবর হোসেন বলেন, “ভারী বৃষ্টিপাত হলেও আলু ক্ষতিগ্রস্ত হয় না। তাই আগাম আলু চাষে কোনো ভয় নেই। এবার আমি আড়াই একর জমিতে আলু লাগিয়েছি।”
শিবনগর ইউনিয়নের বুজরুক সমশেরনগর গ্রামের জাহাঙ্গীর আলমও বলেন, “গত বছর আলু আবাদে লোকসান হয়েছিল, কিন্তু এবার ভালো দাম পাওয়া যাবে বলে তিন বিঘা জমিতে রোমানা জাতের আলু চাষ করেছি।”
উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, চলতি মৌসুমে ফুলবাড়ী উপজেলায় মোট এক হাজার ৮৭০ হেক্টর জমিতে আলু চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এর মধ্যে আগাম আলু চাষের লক্ষ্যমাত্রা ৭৫০ হেক্টর, যা থেকে ১৫,৭৫ মেট্রিক টন উৎপাদনের আশা করা হচ্ছে। বর্তমানে লক্ষ্য অনুযায়ী ৪০ শতাংশ জমিতে আগাম আলু লাগানো হয়েছে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ সাইফ আব্দুল্লাহ মোস্তাফিন বলেন, “যারা এখন আলু লাগাচ্ছেন, তারা ৭০–৭৫ দিনের মধ্যে আলু তুলতে পারবেন। নতুন আলুর চাহিদা ও দাম মৌসুমের শুরুতেই ভালো থাকে। এজন্য কৃষকরা আগাম আলু চাষে উৎসাহিত।” তিনি আরও জানান, কৃষকদের মাঠ পর্যায়ে পরামর্শ দিয়ে সাহায্য করা হচ্ছে এবং ধারণা করা হচ্ছে, চলতি মৌসুমে লক্ষ্যকৃত জমির চেয়ে বেশি জমিতে আলু চাষ হবে।